চীফ রিপোর্টারঃ- দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে ০৯টি অভিযোগের বিষয়ে (৩টি অভিযান, ৬টি দপ্তরে পত্র প্রেরণ) পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলা পরিষদ, খুলনা-এর প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দরপত্র ছাড়াই জেলা পরিষদ ভবন ইজারা নিয়ে বাণিজ্যিক পাখি পালন ও খেয়াঘাট ইজারা না দিয়ে টোল আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযােগে দুদক, সজেকা, খুলনার সহকারী পরিচালক জনাব বিজন কুমার রায় ও জনাব মো: আল-আমীনের নেতৃত্বে ২৫ এপ্রিল ২০২২ সকাল ১১.৩০ ঘটিকায় জেলা পরিষদ, খুলনায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: আসাদুজ্জামানকে অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব এস এম মাহবুবুর রহমান জেলা পরিষদের তিন তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় স্বপরিবারে বসবাস করেন।
সিইও আরো জানান, জেলা পরিষদের আওতায় থাকা খেয়া ঘাট বিধি মেনে ইজারা দেওয়া হয়। করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের সত্যতা রয়েছে এবং ৯টি ডাকবাংলো মেরামতের কাজ করা হয়েছে। সরেজমিনে রূপসা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এক হাজার আসনের অডিটোরিয়ামের নির্মান কাজ চলছে। সিইও জানান, জরুরী ভিত্তিতে কিছু কাজ টেন্ডার ছাড়াই করা হয়েছে। পত্রিকার বিষয়ে তিনি জানান, পূর্বের ধারাবাহিকতায় তিনি উক্ত পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জেলা পরিষদ হতে পত্রিকা প্রকাশের কোন আইনী ভিত্তি আছে কিনা এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়, অডিটোরিয়াম টেন্ডার, ডাকবাংলো মেরামত, খেয়াঘাটের ইজারা এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব এসএম মাহবুবুর রহমানের পাখি পালন এবং সরকারী ভবনে বসবাস সংক্রান্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা করা হচ্ছে। শ্রীঘ্র অভিযান প্রসঙ্গে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কর্তৃক বেতন বিল, বােনাস বিল, শ্রান্তি বিনােদন ভাতা ও বৈশাখী ভাতার অর্থ ভুয়া বিল-ভাউচার সৃজনপূর্বক উত্তোলনসহ ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম এবং সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে দুদক, সজেকা, রংপুর এর সহকারী পরিচালক হোসাইন শরীফ এর নেতৃত্বে একই তারিখে অপর একটি এনফোর্সেমেন্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এনফোর্সেমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনাকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সরকারি বাসায় যারা বরাদ্দ নিয়েছেন তারা বিধি মোতাবেক বাসার ভাড়া যথাযথ ভাবে সরকারি খাতে জমা করছেন কিনা তা যাচাই করেন। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর জন্য বরাদ্দ দুটি অ্যাম্বুলেন্স এবং সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আবু আল হাজ্জাজ কর্তৃক ব্যবহৃত সরকারি গাড়ির জ্বালানি ও মেরামত খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার করে হয়েছে কিনা তা যাচাই এর জন্য লগ বই এবং সংশ্লিষ্ট রেজিস্টার যাচাই করে। কোভিড কালীন সরকারি বরাদ্দ সমূহ নির্ধারিত খাতে ব্যায় হয়েছে কিনা তা যাচাই এর নিমিত্ত সংশ্লিষ্ট রেকর্ড পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত রেকর্ড পত্র যাচাই অন্তে সুপারিশসহ প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলাধীন সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীন খুকনী সাব জোনাল অফিসে বানিজ্যিক সংযোগ গ্রহণে দালালদের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ এবং অন্যের জমির জাল কাগজ সৃজন করে সংযোগ গ্রহণের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পাবনা’র সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্র ধর এর নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্ট টিম কর্তৃক সরেজমিনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঝটিকা অভিযান পরিচালনাকালে উক্ত অফিসে দালালদের দৌরাত্ম ও উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এছাড়া সরেজমিনে পরিদর্শন ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, এনায়েতপুর হাটবাজারের অধিকাংশ জমি সরকারি সম্পত্তি এবং বাজারের পিছনের দিকে কিছু জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি বলে জানা যায়। হাটবাজারে সরকারি সম্পত্তির উপর ব্যবসায়িক বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে ১,৮০০/- টাকা জামানত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তির উপর ব্যবসায়িক সংযোগের ক্ষেত্রে ৮০০/- টাকা জামানত বিদ্যুৎ অফিসকে প্রদান করতে হয়। অনুসন্ধানকালে এনায়েতপুর হাটবাজারের ব্যবসায়িকদের মৌখিক জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের দেখানো রেকর্ডপত্র এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাপ্তরিক রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় অন্যের জমির জাল কাগজ সৃজন করে সংযোগ গ্রহণ এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃক নির্ধারিত জামানত ফি ১,৮০০/- টাকা বা ৮০০/- এর অতিরিক্ত বা এর চেয়ে কম মূল্য গ্রহণের অভিযোগটি সত্য নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়। পরবর্তীতে রেকর্ডপত্রের আলোকে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে শীঘ্রই দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
এছাড়াও দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কমিশনকে অবহিত করার জন্য ০৬টি দপ্তরে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।